জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই

জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার জন্য আপনাকে নিবন্ধক কার্যালয়ে  জন্ম নিবন্ধন বাতিল আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে আপনার সমস্ত জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি, জন্ম নিবন্ধন বাতিলের কারণ ব্যাখ্যা করে একটি বিবৃতি প্রদান করতে হবে।জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার আবেদনপত্রটি নিবন্ধক কার্যালয়ের কর্মকর্তা তাদের নতুন ইউনিক ইউজার আইডি দ্বারা অনলাইনে ডুপ্লিকেট জন্ম নিবন্ধন তদন্ত করবেন। আর নিবন্ধক কর্মকর্তা নিবন্ধন বাতিল বাবদ নির্ধারিত ফি গ্রহণ করবেন। যদি যদি একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রমাণিত হয়, তাহলে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জন্ম নিবন্ধনগুলো বাতিল করা হবে।

আপনার যদি এক কিংবা একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটি বাদ রেখে বাকি সবগুলো বাতিল করে নিতে হবে। একাধিক জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকা যেমন অপরাধ তেমন বিভিন্ন ঝামেলার। একাধিক জন্মনিবন্ধনের একাধিক জন্ম তারিখ বিভিন্ন ঝামেলা সৃষ্টির প্রধান কারণ হতে পারে।

জন্ম নিবন্ধন সনদ যা নাগরিকত্ব, শিক্ষা, চাকরির সুযোগ, ভোটার আইডি কার্ড এবং অন্যান্য সরকারি সেবা গ্রহণের জন্য প্রয়োজন। তবে কিছু ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন বাতিল করা প্রয়োজন হতে পারে। যেমন পূর্বে যখন জন্ম নিবন্ধন হাতে লেখা হতো তখন অনেকে ভুলবশত বা অপ্রয়োজনে একাধিক জন্ম নিবন্ধন করেছেন। অনেক সময়, জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে বা খুঁজে না পেলে, মানুষ দ্বিতীয়বার জন্ম নিবন্ধন করে। এমনকি, কেউ কেউ একই বা ভিন্ন ভিন্ন যায়গায় একাধিকবার জন্ম নিবন্ধন করেছে।

যদি আপনার একাধিক জন্ম নিবন্ধন থাকে, তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেগুলি বাতিল করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একাধিক জন্ম নিবন্ধন থাকার ফলে নানাবিধ সমস্যা হতে পারে, যেমন একাধিক জন্ম নিবন্ধন থাকার ফলে আপনার পরিচয় প্রমাণ করা জটিল হয়ে উঠবে। এটি নানান কাজের জটিলতা এবং সমস্যার কারণ হতে পারে। আর বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির একাধিক জন্মসনদ থাকা দন্ডনীয় অপরাধ। একাধিক জন্ম নিবন্ধন থাকার ফলে আপনি সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, পাসপোর্ট, ভোটার আইডি কার্ড বা ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করা কঠিন হবে।

জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্টার জেনারেল কার্যালয়ের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিভাগের ওয়েবসাইট bdris.gov.bd তে নতুন একটি সিস্টেম চালু হয়েছে এখন পর্যন্ত যেখানে জন্ম নিবন্ধন ডুপ্লিকেট আবেদন বাতিল করার অপশন চালু করা হয়নি। এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার অলরেডি ডুপ্লিকেট জন্ম নিবন্ধন সনদ বাতিলের আবেদন করতে চান তাহলে সরাসরি আপনাকে আপনার নিবন্ধক কার্যালয়ে স্ব শরীরে উপস্থিত হতে হবে।

জন্ম সনদ বাতিলের আবেদন ফি

বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত; জন্ম নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ মার্চ ৮ এর ১৫ (২) ধারায় নির্ধারিত ফিস দিয়ে জন্ম নিবন্ধন বাতিল বা সংশোধনের আবেদন করার কথা বলা হয়েছে। আর বিধিমালার ২১ ধারায় জন্ম নিবন্ধন বাতিলের কোন ফি এর কথা বলা নেই। এক্ষেত্রে সংশোধন ফি আপনাকে প্রদান করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন বাতিলের আইন

বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত;  মার্চ আট জন্ম নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পঞ্চম অধ্যায়ের ধারা ১৫ তে তে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন কিংবা বাতিলের কথা বলা হয়েছে। এখানে যা বলা হয়েছে তা হলো-

  •  (১) আইনের ধারা ১১, ১৩ ও ১৫ তে বর্ণিত’বিধান অনুসরণপূর্বক রেজিস্ট্রার জেনারেল অথবা তাহার পক্ষে অন্য কোন ক্ষমতাসম্পন্ন কর্মচারীর নিকটহইতে কারিগরি সহায়তা গ্রহণ করিয়া জন্ম বা মৃত্যু সনদ বাতিল বা সংশোধন করা যাইবে।
  • (২) বিধি ২১ এ নির্ধারিত ফিস প্রদান করিয়া জমনি ফরম-৮ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি জন্ম বা মৃত্যুসনদ সংশোধন বা বাতিলের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন ।
  • (৩) কোন ব্যক্তির অনুক্লে সরল বিশ্বাসে বা অন্য কোন যৌক্তিক কারণে একাধিক জন্ম বা মৃত্যুনিবন্ধন সনদ ইস্যু হইয়া থাকিলে, নিবন্ধন্্রাপ্ত উ্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্র বিশেষে, তাহার আইনানুগঅভিভাবকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিবন্ধক যাচাই করিয়া অপ্রয়োজনীয় সনদটি বাতিল করিবেন।
  • (8) নিবদ্ধক, কোন ব্যক্তির অনুকূলে অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে একাধিক জন্ম বামৃত্যু নিবন্ধন সনদ ইস্যুর তথ্য প্রাপ্ত হইলে, উহা যাচাই করিয়া দায়ী ব্যক্তির সনদ বাতিল এবং উদ্তদায়ী ব্যক্তি বা উহার সহিত সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনের ধারা ২১ এর বিধান অনুযায়ী দপ্ডমূলকব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।
  • (৫) মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন সনদ বাতিল করা হইলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরআবেদনক্রমে নিবন্ধক শুনানি গ্রহণ করিবেন এবং মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী বা সনদ লিপিবদ্ধকারী বাইস্যুকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ অভিযোগউত্থাপিত হইলে রেজিস্ট্রার জেনারেল বা উপ-রেজিস্ট্রার জেনারেলের পূর্বানুমোদনকত্রমে উপযুক্তআদালতে মামলা দায়ের করিতে এবং মামলার রায়ের ভিত্তিতে আইনের ধারা ১৫ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণকরিতে পারিবেন।
  • (৬) বাতিলকৃত জন্ম বা মৃত্যু সনদের বিষয়ে নিবন্ধকগণ স্ব স্ব কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ্যেনোটিশ টাঙ্গানোর মাধ্যমে সর্বসাধারণকে অবহিত করিবেন।

Similar Posts

7 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।